আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি ॥ কখনও গ্রাম কিংবা শহরের চিত্র, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অথবা প্রকৃতির ছবি বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কচুপাতার আঁচড়ে কিংবা কাঠ কয়লা বা রাস্তায় পড়ে থাকা ইটের টুকরো ও চক দিয়ে এমনই ছবি আঁকছেন ভবঘুরে মোস্তাকিন। ছবির পাশে লিখছে নানা রকম বাণী। মোস্তাকিনের বাড়ি ভোলা জেলায়। ১৯৯০ সালে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। ৪০ থেকে ৪৫ বছর বয়সের মোস্তাকিন আপন মনে একের পর এক ছবি আঁকছেন উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ছবির বিষয়বস্তুও হরেক রকমের। কখনও গ্রাম কিংবা শহরের চিত্র, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অথবা প্রকৃতির ছবি। ছবির পাশে লিখছে নানা রকম বাণী। তার ছবি আঁকা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন উৎসুক জনতা। তার ছবি আঁকার উপকরণ সম্পূর্ণ ভিন্ন, আর ১০টা শিল্পীর সাথে তার পার্থক্য অনেক। অবাক করার মতো বিষয় হচ্ছে মোস্তাকিন ছবি আঁকেন কচুপাতার আঁচড়ে কিংবা কাঠ কয়লা বা রাস্তায় পড়ে থাকা ইটের টুকরো ও চক দিয়ে। ফুটিয়ে তোলেন হৃদয়ের ভাষা। কচুপাতা, কয়লা বা ইটের টুকরো খুঁজে নিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে ছবি আঁকতে থাকেন রাস্তায় রাস্তায়। তার সেই ছবি দেখে কেউ বাহবা দেয়, অনেকেই আবার আঁকা ছবি দেখে খুশি হয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা দেয়। টাকা হাত পেতে নিলেও কারো সাথে কোন কথা বলেন না ভবঘুরে মোস্তাকিন। ক্যামেরায় ছবি তুলতে চাইলেই ঘুরিয়ে নেন মুখ। তবে নাম ঠিকানা জানতে চাইলে লিখে দেন তিনি। বাবা মায়ের নাম জিজ্ঞেস করলে বলেন না মোক্তাকিন। তবে বিবাহিত বলেও জানায় সে। এ যেন কোন অজানা কষ্ট পুষে রেখেছেন নিজের মনে। যে কারনে পাড়ি দিচ্ছেন নিঃসঙ্গ জীবন নিয়ে। ছবি আঁকা দেখতে আসা স্থানীয় সিরাজ সরদার জানান, সরকারি সাহায্য, সহযোগিতা ও চিকিৎসা পেলে পরিবারের কাছে ফিরে যাবে মোস্তাকিন। এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মোঃ আবুল হাশেম জানান, ভোলা জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরসহ আর্থিক সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
Leave a Reply